স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফকে (২২) কুপিয়ে হত্যার ঘটনার পর থেকে বরিশালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের তৎপরতা জোরদার করেছে। বিশেষ গোটা বরিশাল জুড়ে করে পুলিশের গোয়েন্দা নজরদারী বাড়ানোর পাশাপাশি তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
আজ শুক্রবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঞা বলেন, রিফাত শরীফকে হত্যার ঘটনায় জড়িত কোন আসামি যাহাতে পালাতে না পারে সেজন্যই পুলিশের এই তৎপরতা শুরু করা হয়েছে। বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোঃ নুরুল ইসলাম পিপিএম জানান, বিভাগের মধ্যে বরিশালে একটি বৃহৎ নদী বন্দর, দুটি গুরুত্বপূর্ণ বাসস্ট্যান্ড ও একটি বিমান বন্দর রয়েছে। নদী, সড়কপথ ও আকাশ পথ ব্যবহার করে যাহাতে কোন আসামি পালাতে না পারে সেজন্য বরিশালজুড়ে তল্লাশি কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সকল আসামিরা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
ওসি আরও জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বরিশাল নদী বন্দর এলাকায় কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ তল্লাশি চালানোর সময় ঢাকাগামী এমভি মানামী লঞ্চ থেকে সন্দেহজনক ভাবে বরগুনার চার যুবককে আটক করা হয়। আটককৃতদের গ্রামের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। তারা সবাই বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী। তাদের এক বন্ধুকে ঢাকায় যাওয়ার পথে এগিয়ে দিতে তারা লঞ্চঘাটে এসেছিলো। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়েছে। পরে রিফাত হত্যার সাথে আটককৃতদের কোন যোগসাজেশ না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে পরিবারের জিম্মায় বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আটক চার জনের মধ্যে এক জনের বিষয়ে সন্দেহ জোরদার হওয়ায় বরগুনা জেলা পুলিশের সহায়তা নেয়া হয়। তবে শেষপর্যন্ত রিফাত হত্যার ঘটনার সাথে আটককৃতদের জড়িত থাকার কোন প্রমান পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারী কলেজের সম্মুখে বসে প্রকাশ্যে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফ (২২) নামের এক যুবককে কুপিয়ে জখম করে ওই এলাকার ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী নয়ন বন্ড ও তার সহযোগিরা। গুরুতর আহত রিফাতকে প্রথমে বরগুনা সদর হাসপাতাল ও পরে বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে সেখানে বিকেল সোয়া চারটার দিকে অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রপাচারের সময় রিফাতের মৃত্যু হয়। রিফাতের মৃত্যুর খবর ও প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে প্রধানমন্ত্রীসহ দেশব্যাপী ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। তাৎক্ষনিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হত্যার ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সাথে রিফাতের খুনিরা যাতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য দেশের প্রত্যেকটি বিমানবন্দর এবং সীমান্তে প্রশাসনের পক্ষ থেকে রেড এলার্ট জারি করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসাথে আসামিরা যেন দেশত্যাগ করতে না পারে সে বিষয়ে বর্ডারে এলার্ট জারি করতে পুলিশের আইজিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বরগুনা সদর থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন জানান, ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের সনাক্ত করে তাদের ধরতে অভিযানে নেমে এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply